আমাজন রেইন ফরেস্টে ভয়াবহ অগিকাণ্ডে বনাঞ্চল ধ্বংসে সিপিবির উদ্বেগ

Posted: 25 আগস্ট, 2019

ভয়ানক অগ্নিকাণ্ডে দক্ষিণ আমেরিকার ঘনবর্ষণ বনাঞ্চল ধ্বংসের ঘটনায় বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি) গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। একইসঙ্গে সিপিবি ব্রাজিলের চরম দক্ষিণপন্থি প্রতিক্রিয়াশীল রাষ্ট্রপতি জায়ের বলসনারোর সরকারের গণবিরোধী নীতির তীব্র নিন্দা জানিয়েছে। তাদের এই পরিবেশ বিধ্বংসী নীতির ফলে সেখানকার পাঁচ লক্ষ একরেরও বেশি বনাঞ্চল, হাজারও প্রজাতির বন্য প্রাণী এবং স্থানীয় অধিবাসীরা মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আজ ২৫ আগস্ট এক বিবৃতিতে সিপিবি সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম এবং সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ শাহ আলম বলেন, আমাজন বনাঞ্চলের এই ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড পুরো দক্ষিণ আমেরিকা জন্য এক বিরাট পরিবেশগত বিপর্যয়। শুধু তাই নয়, এই অগ্নিকাণ্ড গোটা বিশ্বে পরিবেশ বিপর্যয়ের ক্ষেত্রে এক মারাত্মক মাত্রা যুক্ত করবে। ফলে বিষয়টি গোটা বিশ্বের ও সভ্যতার অস্তিত্ব রক্ষার ক্ষেত্রে ভয়াবহ আশঙ্কার বিষয় হয়ে উঠেছে। প্রসঙ্গে উল্লেখ্য যে, বলসেনারোর নেতৃত্বাধীন ব্রাজিলের ক্ষমতাসীন প্রতিক্রিয়াশীল সরকারই বহুলাংশে এই বিপর্যয়ের জন্য দায়ী। বর্তমান চরম দক্ষিণপন্থি ও সাম্রাজ্যবাদের প্রতিভূ ব্রাজিল সরকার তাদের কায়েমী স্বার্থ চরিতার্থ করার জন্য পরিবেশ রক্ষার নীতি গ্রহণের বদলে আমাজন বনাঞ্চলকে বিভিন্ন বহুজাতিক কোম্পানির কাছে লুটপাটের জন্য তুলে দিয়েছে। যার ফল হিসেবে আজ এই ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড ও পরিবেশগত বিপর্যয়ের ঘটনা ঘটেছে। পক্ষান্তরে, এটিও লক্ষ্যণীয় যে, ইভো মোরালেসের নেতৃত্বে প্রতিষ্ঠিত ল্যাটিন আমেরিকার সবচেয়ে দরিদ্র দেশ বলিভিয়ার বামপন্থি সরকার দেশটির সীমিত সামর্থ্য দিয়ে এই অগ্নি নির্বাপণ ও পরিবেশ রক্ষার জন্য আপ্রাণ চেষ্টা চালাচ্ছে। একইসঙ্গে বলিভিয়ার সরকার তাদের প্রতিবেশী দেশগুলোকেও আমাজন বনাঞ্চলের আগুন নেভানোর কাজে শামিল হতে আহ্বান জানিয়েছে। উল্লেখ্য, আমাজনের এই ঘনবর্ষণ বনাঞ্চল দক্ষিণ আমেরিকার ৭.৪ মিলিয়ন বর্গকিলোমিটার এলাকা জুড়ে বিস্তৃত। যা ব্রাজিলের প্রায় ৬০ শতাংশ এলাকা, পেরু, বলিভিয়া, ইকুয়েডর, প্যারাগুয়ে, কলম্বিয়া, সুরিনাম, গ্যায়ানা এবং ফরাসি গায়ানা পর্যন্ত ছড়িয়ে আছে। এই বিরাট বনাঞ্চল প্রতিবছর এক বিলিয়ন টন সমপরিমাণ কার্বন ডাই অক্সিজেন গ্যাস শোধন করে পরিশুদ্ধ অক্সিজেন গ্যাস নিঃসরণ করে। যে কারণে একে ‘পৃথিবীর ফুসফুস’ বলে অভিহিত করা হয়। তাই এই পরিবেশগত বিপর্যয় দক্ষিণ আমেরিকার পাশাপাশি বাংলাদেশ এবং গোটা ধরিত্রীকে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করবে। সিপিবি এই বিপর্যয়ের জন্য অবিলম্বে জাতিসংঘের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক হস্তক্ষেপ দাবি করছে। সেই সাথে সিপিবি তদন্ত ও দোষীদের শাস্তি দাবি করছে। সিপিবি নেতৃবৃন্দ আরও বলেন, এই অগ্নিকাণ্ডের মধ্য দিয়ে কর্পোরেট কোম্পানিসমূহের সীমাহীন লোভ এবং পুঁজিবাদের নোংরা চেহারা নগ্নভাবে প্রকাশিত হয়ে পড়েছে।