হাওরের দুর্গত এলাকায় সিপিবি-বাসদ-এর নেতৃবৃন্দ হাওরের কান্না থামাতে স্বল্পমেয়াদী ও দীর্ঘমেয়াদী উদ্যোগ চাই

Posted: 03 মে, 2017

বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি) ও বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল-বাসদ-এর কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ বলেছেন, হাওরে মহাবিপর্যয় নেমে এসেছে। এই মহাবিপর্যয়ে হাওরের মানুষ এখন সর্বস্বান্ত। অত্যন্ত দুঃখজনক সত্যি হচ্ছে, সরকার এখনও হাওরকে ‘দুর্গত এলাকা’ হিসেবে ঘোষণা করেনি। হাওরের সংকট কাটাতে উদ্যোগহীনতা, অব্যবস্থাপনা আর লুটপাটের দায় সরকার কিছুতেই এড়াতে পারে না। দ্রুতই হাওর অঞ্চলকে ‘দুর্গত এলাকা’ হিসেবে ঘোষণা করতে হবে। হাওরের কান্না থামাতে স্বল্পমেয়াদী ও দীর্ঘমেয়াদী উদ্যোগ চাই। দুর্গত হাওর এলাকা পরিদর্শনে গিয়ে আজ ৩ মে সিপিবি-বাসদ-এর কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দলের নেতৃবৃন্দ এসব কথা বলেন। নেতৃবৃন্দ দুর্গত শনির হাওর ও আলির হাওর এলাকা পরিদর্শন করেন। আজ সুনামগঞ্জ জেলার জামালগঞ্জ উপজেলার সাচনা বাজারে স্থানীয় সিপিবি নেতা অখিল তালুকদারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন বাসদ-এর সাধারণ সম্পাদক খালেকুজ্জামান, সিপিবি’র প্রেসিডিয়াম সদস্য সাজ্জাদ জহির চন্দন, সিপিবি’র কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য রুহিন হোসেন প্রিন্স, বাসদ-এর কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য বজলুর রশীদ ফিরোজ, সিপিবি’র কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য আব্দুল্লাহ কাফি রতন, বাসদ নেতা নিখিল দাশ। স্থানীয় নেতৃবৃন্দের মধ্যে বক্তব্য রাখেন সিপিবি’র সুনামগঞ্জ জেলার সভাপতি চিত্তরঞ্জন তালুকদার, বাসদ নেতা মিজানুর রহমান রাসেল, কৃষকনেতা ধনঞ্জয় পাল, ক্ষেতমজুর নেতা শহীদ মিয়া, ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য মোনেসা বিবি, ছাত্র ইউনিয়ন নেতা পুলক তালুকদার প্রমুখ। সমাবেশটি পরিচালনা করেন ক্ষেতমজুর নেতা আমজাদ হোসেন। সমাবেশে কমরেড খালেকুজ্জামান বলেন, হাওরের দুর্গত মানুষের ভবিষ্যত অনিশ্চিত। মানুষ বাঁচাতে নানামুখী উদ্যোগ নিতে হবে। কিন্তু সরকারের উদ্যোগ সীমিত। অবিলম্বে হাওর অঞ্চলকে ‘দুর্গত এলাকা’ হিসেবে ঘোষণা করতে হবে। সকল প্রকার কৃষিঋণ, এনজিও ঋণ, মহাজনী ঋণ মওকুফ করে দিতে হবে। পাশাপাশি পর্যাপ্ত পরিমাণে নতুন করে সুদমুক্ত ঋণ দিতে হবে এবং শস্যবিমা চালু করতে হবে। জলমহালের ইজারা বাতিল করে জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করে দিতে হবে। তিনি মহাজনী কারবারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ এবং দুর্দশাগ্রস্থ কৃষকদের জিম্মি করে জমি কেনাবেচা (ডিস্ট্রেস সেইল) ও দাদন ব্যবসা বন্ধ করার দাবি জানান। সমাবেশে কমরেড চন্দন সরকারি বরাদ্দের লুটপাট ঠেকাতে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়ে বলেন, দুর্গত মানুষের মধ্যে সরকারি উদ্যোগে ১০ টাকা দরে চাল সরবরাহ করতে হবে। দুর্নীতিবাজ সরকারি কর্মকর্তা ও ঠিকাদারদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। সব নদী-খাল পুনর্খনন করতে হবে। এদিকে আজ বিকেলে সুনামগঞ্জের জগৎজ্যোতি পাঠাগারে স্থানীয় বিভিন্ন সংগঠনের নেতৃবৃন্দ এবং জনসাধারণের সঙ্গে মতবিনিময় করেন।