প্রস্তুত সোহরাওয়ার্দী, লাল পতাকায় সয়লাব ঢাকা

Posted: 28 অক্টোবর, 2016

বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি)-র একাদশ কংগ্রেস শুরু হচ্ছে আজ। দুপুর ২টায় ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে উদ্বোধনের মাধ্যমে কংগ্রেসের কার্যক্রম শুরু হবে। এরইমধ্যে সমাবেশের শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি শেষ করেছে মঞ্চ ও সাজসজ্জা উপ-কমিটির সদস্যরা। নিরাপত্তায় নেয়া হয়েছে বিশেষ ব্যবস্থা। পুলিশ-র‌্যাবের পাশাপাশি কমিউনিস্ট পার্টির নিজস্ব নিরাপত্তা বাহিনী এরই মধ্যে উদ্বোধনস্থলের দায়িত্ব বুঝে নিয়েছে। উদীচী শিল্পীগোষ্ঠীর গীতিআলেখ্য-দিন বদলের পালা দিয়ে শুরু হবে আনুষ্ঠানিক কার্যক্রম। এরপর জাতীয় সংগীত এবং জাতীয় ও পার্টি পতাকা উত্তোলনের মাধ্যমে কংগ্রেসের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করবেন সিপিবির সভাপতি, সাধারণ সম্পাদকসহ কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ। প্রতীকী শহীদ বেদিতে পুষ্পমাল্য অর্পণের পর কংগ্রেস প্রস্তুতি কমিটির চেয়ারম্যান স্বাগত জানাবেন সবাইকে। এরপর থাকবে- কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদকের সূচনা বক্তব্য, বিদেশি অতিথিদের পরিচয় পর্ব। এরপর একে একে বক্তব্য দেবেন পার্টির উপদেষ্টা শ্রমিকনেতা কমরেড সহিদুল্লাহ চৌধুরী, কমরেড জসিমউদ্দিন মণ্ডল ও কমরেড মনজরুল আহসান খান। সভাপতির বক্তব্যের পর ‘কমিউনিস্ট ইন্টারন্যাশনাল’ গেয়ে উদ্বোধনী সমাবেশের কাজ শেষ হবে। এরপর সারাদেশ থেকে আসা নেতাকর্মীদের নিয়ে বর্ণাঢ্য র‌্যালি বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে শেষ হবে। উদ্বোধনী সমাবেশে যোগ দিতে এর মধ্যে বিভিন্ন জেলার কমরেডরা ঢাকায় নামতে শুরু করেছেন। সকালে সদরঘাট এলাকায় বরিশাল, পটুয়াখালি, ভোলা, বরগুনা, ঝালকাঠি ও চাঁদপুরের কমরেডরা ঢাকায় নামেন। এরপর লাল পতাকা মিছিল নিয়ে তারা সদরঘাট থেকে পার্টির কেন্দ্রীয় কার্যালয় ও সম্মেলনস্থলের দিকে যান। ঢাকায় নেমেছেন চট্টগ্রাম ও সিলেট থেকে আসা কমরেডরাও। রিজার্ভ লাল পতাকার ট্রেনে সকালে কমলাপুর নেমে মিছিল নিয়ে আসেন মুক্তিভবনে। রেল-লঞ্চের পাশাপাশি ঢাকায় ঢুকতে শুরু করেছে বিভিন্ন জেলার কমরেডদের বহন করা বাসও। গাবতলী, কল্যাণপুর, সায়েদাবাদ ও গুলিস্তান দিয়ে এরইমধ্যে অর্ধশত বাস কমিউনিস্ট পার্টির কংগ্রেসের উদ্বোধনী সমাবেশে অংশ নিতে ঢাকায় প্রবেশ করেছে। ঢাকার বিভিন্ন প্রবেশ পথে আসা কমরেডদের অভ্যর্থনা জানাচ্ছেন প্রস্তুতি কমিটির অভ্যর্থনা উপ-কমিটির সদস্যরা। বিভিন্ন পথ দিয়ে আসা লাল পতাকার মিছিলের প্রাথমিক গন্তব্য মুক্তিভবন, কমিউনিস্ট পার্টির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে যেন সব পথ লাল পতাকা হাতে মিশেছে। কংগ্রেসে যোগ দিতে আসা বিদেশি অতিথিরাও ঢাকায় পৌঁছেছেন। এবার ১০টি দেশ থেকে মোট ২৬ জন প্রতিনিধি কংগ্রেসে সংহতি জানাতে উপস্থিত থাকবেন বলে ভ্রাতৃপ্রতীম এসব পার্টির শীর্ষ নেতৃত্ব নিশ্চিত করেছেন। সিপিবির দশম কংগ্রেস হয়েছিল ২০১২ সালের ১১-১৩ অক্টোবর। গঠনতন্ত্র অনুযায়ী ৪ বছর পর এবারের কংগ্রেস অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এবার সারাদেশের ৬৮৩ জন প্রতিনিধি কংগ্রেসের প্রতিনিধি নির্বাচিত হয়েছেন, যার মধ্যে ২১৭ জন নারী ও ১৭ জন আদিবাসী। এর বাইরে ১০৮ জনকে পর্যবেক্ষক মনোনীত করা হয়েছে। ৯৯ জন ভেটারেন কমরেডকে জানানো হয়েছে বিশেষ আমন্ত্রণ। এদের নিয়ে ২৯ অক্টোবর সকাল সাড়ে ৯টা থেকে গুলিস্তানের কাজী বশির মিলনায়তনে শুরু হবে রুদ্ধদ্বার সাংগঠনিক অধিবেশন। একইদিন বিকেল ৩টায় বিদেশি প্রতিনিধিদের নিয়ে জাতীয় প্রেসক্লাবে ‘সাম্রাজ্যবাদ, নয়া উদারনীতিবাদ ও ধর্মীয় মৌলবাদ’ বিষয়ক এক আন্তর্জাতিক সেমিনার অনুষ্ঠিত হবে। ২৯-৩০ অক্টোবর সন্ধ্যা ৭.৩০টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত মহানগর নাট্যমঞ্চে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান চলবে।