বাঁশখালীতে শ্রমিক হত্যার প্রতিবাদে বাম
গণতান্ত্রিক জোট কেন্দ্রীয় পরিচালনা পরিষদের উদ্যোগে আজ ১৮ এপ্রিল ২০২১
সকাল সাড়ে এগারটায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধন বিক্ষোভ সমাবেশ
অনুষ্ঠিত হয়।
বাম গণতান্ত্রিক জোটের সমন্বয়ক ও বাসদ কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য
কমরেড বজলুর রশীদ ফিরোজ এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মানববন্ধন সমাবেশে বক্তব্য
রাখেন সিপিবি নেতা সাজেদুল হক রুবেল, বাসদ (মার্কসবাদী)’র নেতা মানস
নন্দী, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির নেতা আকবর খান, গণসংহতি আন্দোলনের
বাচ্চু ভুইয়া, ইউনাইটেড কমিউনিস্ট লীগের তৈমুর খন্দকার অপু, গণতান্ত্রিক
বিপ্লবী পার্টির নেতা আমেনা বেগম, সমাজতান্ত্রিক আন্দোলনের হামিদুল হক।
সমাবেশ শেষে একটি বিক্ষোভ মিছিল প্রেসক্লাব থেকে তোপখানা রোড হয়ে পল্টন
মোড়ে গিয়ে শেষ হয়।
সমাবেশে নেতৃবৃন্দ বলেন, চট্টগ্রামের বাঁশখালীতে
গতকাল এস আলম গ্রুপের বিদ্যুৎ কেন্দ্র এস এস পাওয়ার প্লান্টের শ্রমিকদের
বকেয়া বেতনসহ ন্যায়সংগত ১০ দফা দাবিতে শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভে বিনা উসকানীতে
মালিকের নির্দেশে পুলিশ, আনসার, সিকিউরিটি ও সন্ত্রাসী বাহিনীর গুলিতে ৫ জন
নিহত ও অর্ধশতাধিক শ্রমিক আহত হয়েছে। শ্রমিকদের দাবি ছিল মাসের ৫ তারিখের
মধ্যে বেতন পরিশোধ, রোজায় বিকেল ৫টার মধ্যে ছুটি দেয়া এবং ইফতারের বরাদ্দ
দেয়া ইত্যাদি যা ছিল অত্যন্ত যৌক্তিক।
নেতৃবৃন্দ বলেন, ঐ বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের শুরুতেও ফসলী জমি অধিগ্রহণ করার বিরুদ্ধে স্থানীয়
অধিবাসীরা বিক্ষোভ
করলে ২০১৬ সালেও গুলি করে ৫ জনকে হত্যা করা হয়েছিল। ঐ
হত্যাকাণ্ডের বিচার হয়নি, সেই হত্যার বিচার হলে হয়তো আজ পুনরায় হত্যাকাণ্ড
সংঘটিত নাও হতে পারতো।
নেতৃবৃন্দ বলেন, এস আলম গ্রুপ শ্রমিকের পাওনা
দিতে পারে না অথচ দানবীর সেজে পটিয়া উপজেলায় ৮৫ মসজিদে ২০ কোটি টাকা এবং ৩০
মাদ্রাসায় ১০ কোটি টাকা দান করে বাহবা কুড়িয়েছে। এই লুটেরা গ্রুপ রাষ্ট্র ও
সরকারের পৃষ্ঠপোষকতায় ৭টি বেসরকারি ব্যাংক ও কয়েকটি বেসরকারি টিভি চ্যানেল
দখল করেছে।
নেতৃবৃন্দ বলেন, পুঁজিবাদী শোষণমূলক রাষ্ট্রে শ্রমিককে
শোষণ করেই মালিক শ্রেণি ফুলে ফেঁপে ওঠে আর রাষ্ট্র, সরকার তাদের
আশ্রয়-প্রশ্রয় ও পৃষ্ঠপোষকতা দেয়।
সমাবেশ থেকে নেতৃবৃন্দ দাবি করেন, বিচার
বিভাগীয় তদন্তের মাধ্যমে বাঁশখালীতে এস আলম গ্রুপের বিদ্যুৎকেন্দ্রে
শ্রমিক হত্যার জন্য দায়ী মালিক কর্তৃপক্ষ, পুলিশ, আনসার, সিকিউরিটিগার্ডদের
চিহ্নিত করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে।
পাওনা পরিশোধ না করে গুলি করে শ্রমিকদের হত্যার দায়ে এস আলম গ্রুপের সাথে সম্পাদিত বিদ্যুৎকেন্দ্রের চুক্তি বাতিল করতে হবে।
নিহত
শ্রমিকদের আজীবন আয়ের সমপরিমাণ অর্থ ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। আহত শ্রমিকদের
রাষ্ট্রীয় খরচে সুচিকিৎসা ও ক্ষতিপূরণ-পুনর্বাসন করতে হবে।
করোনা লকডাউন
চলাকালে শ্রমজীবী হতদরিদ্র সকলকে এক মাসের খাদ্য, নগদ ৫ হাজার টাকা এবং
বিনামূল্যে করেনা টেস্ট, চিকিৎসা ও ভ্যাকসিন দিতে হবে।