Revolutionary democratic transformation towards socialism

করোনা মহাবিপর্যয়কালে সিপিবি’র দাবি শ্রমিক-কর্মচারীদের ৩ মাসের সবেতন ছুটি দিন জরুরি প্রয়োজনে কারখানা খুললে ঘোষিত স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলুন

## স্বাস্থ্যবিধি মনিটরিং এর জন্য গার্মেন্ট কারখানা মনিটরিং সেল খুলেছে সিপিবি বর্তমান করোনা-মহাবিপর্যয়কালে চাকরিচ্যুতির ভয় দেখিয়ে শ্রমিকদের কাজে যোগ দিতে বাধ্য করে, কিছু গার্মেন্ট কারখানা খুলে দেয়ায় তীব্র নিন্দা ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি)। আজ ২৮ এপ্রিল অনলাইনে অনুষ্ঠিত ‘কোভিড-১৯ রেসপন্স টিমে’র এক সভায় সিপিবির নেতৃবৃন্দ বলেছেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে গার্মেন্ট কারখানা খুলে দেয়া চরম হঠকারিতা। এটা মালিকের মুনাফার স্বার্থে শ্রমিকদের মৃত্যুকূপে ঠেলে দেয়া ছাড়া কিছুই নয়। করোনা-মহাবিপর্যয়কালে এর আগেও মালিকরা গার্মেন্ট শ্রমিকদের নিয়ে ছিনিমিনি খেলেছে। শত শত কিলোমিটার হেঁটে ঢাকায় এসে শ্রমিকরা আবার ফিরে যেতে বাধ্য হয়েছে। দেশে যখন ‘সাধারণ ছুটি’, ‘লকডাউন’ চলছে এবং দেশবাসী চরম আতঙ্কে, তখন বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ ছাড়াই একেবারে অপ্রস্তুত অবস্থায় এভাবে গার্মেন্টস খুলে দেয়াটা গোটা জাতির জন্যই আত্মঘাতী। সিপিবির সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এ সভায় আরও অংশ নেন সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ শাহ আলম, সহকারী সাধারণ সম্পাদক কাজী সাজ্জাদ জহির চন্দন, প্রেসিডিয়াম সদস্য লক্ষী চক্রবর্তী, রফিকুজ্জামান লায়েক, মিহির ঘোষ, আবদুল্লাহ ক্বাফী রতন, অনিরুদ্ধ দাশ অঞ্জন, কেন্দ্রীয় কমিটির সম্পাদক আহসান হাবিব লাবলু, রুহিন হোসেন প্রিন্স, জলি তালুকদার, কেন্দ্রীয় কমিটির কোষাধ্যক্ষ মাহবুবুল আলম, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ডা. ফজলুর রহমান। সভায় সিপিবির নেতৃবৃন্দ আরও বলেন, করোনা-মহাবিপর্যয়কালেও বকেয়া বেতনের জন্য গার্মেন্ট-শ্রমিকদের রাজপথে নেমে আসতে হচ্ছে। আবার শ্রমিক ছাঁটাই, গার্মেন্টস লে-অফ চলছে। শ্রমিকদের জীবন নিয়ে এভাবে ছিনিমিনি খেলা বন্ধ করতে হবে। শ্রমিকদের ন্যায্য পাওনা বুঝিয়ে দিতে হবে। গার্মেন্টসহ বিভিন্ন বেসরকারি কারখানা-প্রতিষ্ঠানের শ্রমিক-কর্মচারীদের ৩ মাস সবেতন ছুটি দিতে হবে। এ বাবদ ২৫ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ দিতে হবে। এই অর্থ গার্মেন্টসসহ শ্রমিক-কর্মচারীদের ব্যাংক-অ্যাকাউন্ট অথবা মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে সরাসরি প্রদানের ব্যবস্থা করতে হবে। নেতৃবৃন্দ আরও বলেন, মাস্ক-পিপিইসহ বিভিন্ন চিকিৎসা-সামগ্রী তৈরিসহ জরুরি প্রয়োজনে কোনো কোনো গার্মেন্ট চালু রাখার প্রয়োজন হলে, তা ঠিক করতে হবে বিশেষজ্ঞদের পরামর্শে, মালিক ও আমলাদের সুবিধামতো নয়। জরুরি প্রয়োজনে চালু রাখা গার্মেন্টে শ্রমিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। জরুরি প্রয়োজনে চালু গার্মেন্টে কারখানার শ্রমিকদের ক্ষেত্রে ঘোষিত স্বাস্থ্যবিধি পরিপূর্ণভাবে মানতে হবে। এর জন্য প্রথমে শ্রমিকদের স্বাস্থ্য সম্মত থাকা ও খাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করতে হবে। প্রয়োজনে সকল শ্রমিক ও কর্মচারীকে কারখানার অভ্যন্তরে থাকার ব্যবস্থা করতে হবে। কারখানা থেকে দূরে অবস্থানরত শ্রমিকদের যাতায়াতের জন্য স্যানিটাইজ বাসের ব্যবস্থা করতে হবে। কারখানায় প্রবেশের সময় পরিপূর্ণভাবে সকল শ্রমিককে স্যানিটাইজ করে নিতে হবে। হ্যান্ড হেল্ড ইনফ্রারেড থার্মোমিটার দিয়ে প্রতিটি শ্রমিকের তাপমাত্রা মেপে ভেতরে ঢোকাতে হবে। কারখানার অভ্যন্তরে মেশিনসমূহ এমনভাবে পুন:স্থাপন করে নিতে হবে যাতে ঘোষিত প্রয়োজনীয় শারীরিক দূরত্ব বজায় থাকে। প্রতিটি শ্রমিককে কারখানার থেকে মাস্ক, গ্লাভস, হেডকাভারসহ প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্য-সুরক্ষা সামগ্রী প্রদান করতে হবে। এ সময়কালে কোন শ্রমিকের বেতন-ভাতা বকেয়া রাখা যাবে না। করোনা মহাবিপর্যয়ের মধ্যে কর্মরত সকল শ্রমিককে ঝুঁকি ভাতা প্রদান করতে হবে। এসময় কোন কারখানায় শ্রমিক ছাঁটাই এবং লে-অফ করা যাবে না। সিপিবির গার্মেন্ট কারখানা মনিটরিং সেল গঠন জরুরি প্রয়োজনে বিশেষজ্ঞদের পরামর্শে খুলে দেয়া গার্মেন্ট কারখানাসমূহে সরকার ও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা কর্তৃক ঘোষিত স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা হচ্ছে কিনা তা মনিটর করার জন্য বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি) ’গার্মেন্ট কারখানা মনিটরিং সেল’ গঠন করেছে। প্রবীন শ্রমিকনেতা সিপিবি’র কোষাধ্যক্ষ কমরেড মাহবুবুল আলমকে আহ্বায়ক করে আট সদস্য বিশিষ্ট সেলের অন্য সদস্যরা হচ্ছেন, সিপিবি’র প্রেসিডিয়াম সদস্য ও গার্মেন্ট টিইউসি’র উপদেষ্টা কমরেড আবদুল্লাহ ক্বাফী রতন, কেন্দ্রীয় কমিটির সম্পাদক কমরেড রুহিন হোসেন প্রিন্স, কেন্দ্রীয় কমিটির সম্পাদক ও গার্মেন্ট টিইউসি’র সাধারণ সম্পাদক কমরেড জলি তালুকদার, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ও গার্মেন্ট টিইউসি’র সভাপতি কমরেড অ্যাডভোকেট মন্টু ঘোষ, সদস্য ও সাবেক সাধারণ সম্পাদক কমরেড সাদেকুর রহমান শামীম, সদস্য ও গার্মেন্ট টিইউসি’র কার্যকরী সভাপতি কমরেড রুহুল আমিন ও গার্মেন্ট টিইউসি’র আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক কমরেড মঞ্জুর মঈন। চালু কারখানায় স্বাস্থ্যবিধির লংঘন হলে নিম্নলিখিত ফোন নম্বরসমূহে যোগাযোগ করার জন্য অনুরোধ করা হচ্ছে- ০১৬৭৫০২১৮১৯; ০১৯১৪৮০৫৮৭০; ০১৯৩২৪৪৬২৬৪; ০১৯২৪১৫০২৫০।

Print প্রিন্ট উপোযোগী ভার্সন

Login to comment..