Revolutionary democratic transformation towards socialism

গণতান্ত্রিক অধিকার আদায়, জনজীবনের সংকট সমাধান ও বিকল্প গড়ে তোলার লক্ষ্যে বামপন্থীদের আশু দাবিসমূহ ঘোষণা


গণতন্ত্র ও গণতান্ত্রিক অধিকার আদায়, দুর্নীতি-লুটপাট-দখলদারিত্ব বন্ধ, জনজীবনের সংকট সমাধান ও মহাজোট-জোট-এর বাইরে বাম-গণতান্ত্রিক বিকল্প গড়ে তুলতে প্রস্তাব ও আশু দাবিসমূহ তুলে ধরে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের ঘোষণা দিয়েছে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি), বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল-বাসদ ও গণতান্ত্রিক বাম মোর্চা। আজ ১ আগস্ট ঢাকার কমরেড মণি সিংহ সড়কস্থ মৈত্রী মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত এক সংবাদ সম্মেলনে বামপন্থীদের আশু দাবিসমূহ ঘোষণা করা হয়। সংবাদ সম্মেলনে সূচনা বক্তব্য রাখেন বাসদ-এর সাধারণ সম্পাদক খালেকুজ্জামান। প্রস্তাব ও আশু দাবি উত্থাপন করেন গণতান্ত্রিক বাম মোর্চার সমন্বয়ক ও বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক। সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন সিপিবি’র সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম। সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন বাসদ (মার্কসবাদী)-এর কেন্দ্রীয় নেতা শুভ্রাংশু চক্রবর্তী, গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টির সাধারণ সম্পাদক মোশরেফা মিশু, ইউনাইটেড কমিউনিস্ট লীগের সাধারণ সম্পাদক মোশাররফ হোসেন নান্নু, গণসংহতি আন্দোলনের ভারপ্রাপ্ত সমন্বয়কারী আবুল হাসান রুবেল, সমাজতান্ত্রিক আন্দোলনের আহ্বায়ক হামিদুল হক, সিপিবি’র সাধারণ সম্পাদক মো. শাহ আলম, বাসদ-এর কেন্দ্রীয় নেতা বজলুর রশিদ ফিরোজ, ইউনাইটেড কমিউনিস্ট লীগের কেন্দ্রীয় নেতা আব্দুস সাত্তার, বাসদ (মার্কসবাদী)-এর কেন্দ্রীয় নেতা মানস নন্দী, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির কেন্দ্রীয় নেতা বহ্নিশিখা জামালী, গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টির কেন্দ্রীয় নেতা শহীদুল ইসলাম সবুজ, গণসংহতি আন্দোলনের কেন্দ্রীয় নেতা জুলহাসনাইন বাবু প্রমুখ। সংবাদ সম্মেলনের লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, স্বাধীনতা উত্তর শাসক-শোষকশ্রেণি ও তাদের দলসমূহের প্রতারণা, নির্মম শোষণ, লুণ্ঠন, দমন-পীড়ন আর হত্যা-খুনের রাজনীতির কারণে জনগণের মুক্তির স্বপ্ন-আকাঙ্ক্ষা তারা বিপর্যস্ত করেছে। আওয়ামী লীগ-বিএনপি’র মতো দলগুলোর দুঃশাসন আর বিভিন্ন সময়ে সামরিক শাসনের যাতাকলে অপার সম্ভাবনার বাংলাদেশ আজ দেশি-বিদেশি লুটেরা, সন্ত্রাসী, দাগি অপরাধী ও মাফিয়াদের স্বর্গরাজ্যে পরিণত হয়েছে; মাথা চাড়া দিয়ে উঠেছে ’৭১ এর গণহত্যাকারী ঘাতক শক্তিসহ নানা সাম্প্রদায়িক জঙ্গিবাদী অপশক্তি। আরও বলা হয়, মহাজোট সরকারের দুর্নীতি আর দুঃশাসনে মানুষ আজ দিশেহারা। সংবিধান স্বীকৃত গণতান্ত্রিক অধিকারসমূহ এখনও রুদ্ধ, ভোটাধিকারও কেড়ে নেয়া হয়েছে। নিপীড়ন, হয়রানিমূলক মামলা, অপহরণ, গুম-খুন, বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের মাধ্যমে আইনের শাসনের ছিটেফোটাও রাখা হচ্ছে না। বিরোধী দল ও মতকে দমন করা হচ্ছে। মুক্তিযুদ্ধের চেতনার তকমা আর উন্নয়নের কথা বলে বস্তুত সরকার তাদের যাবতীয় অপকর্মকে জায়েজ করার চেষ্টা করছে। বাতিল করার সমস্ত সুযোগ থাকা সত্ত্বেও সরকার সংবিধানের ২য়, ৮ম সংশোধনী, প্রধানমন্ত্রীকেন্দ্রীক অগণতান্ত্রিক ক্ষমতা কাঠামোর ভিত্তি সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদসহ সকল অগণতান্ত্রিক, সাম্প্রদায়িক ও ক্ষুদ্র জাতিসত্ত্বাবিরোধী ধারা ও সংশোধনীসমূহ বহাল রেখেছে। সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানসমূহকে অকার্যকর করে রাখা হয়েছে। এসবের মধ্য দিয়ে রাষ্ট্রের ফ্যাসিবাদী প্রবণতা ও চরিত্র বিপজ্জনকভাবে প্রসারিত করা হচ্ছে। সংবাদ সম্মেলনে আরও বলা হয়, গোটা নির্বাচনী ব্যবস্থা কার্যত ভেঙে পড়েছে। নির্বাচন পুরোপুরি টাকার খেলায় পর্যবসিত হয়েছে। দুর্নীতিবাজ, লুটেরা গোষ্ঠির কালো টাকা, সন্ত্রাস, পেশীশক্তি, সাম্প্রদায়িকতা, আঞ্চলিকতা, আমলাতান্ত্রিক খবরদারির কারণে বিদ্যমান ব্যবস্থায় সৎ, সংগ্রামী, নিবেদিতপ্রাণ রাজনৈতিক নেতা-কর্মীদের নির্বাচনে অংশগ্রহণ ও জয়লাভ প্রায় অসম্ভব করে তোলা হয়েছে। ভোটের সংখ্যানুপাতিক প্রতিনিধিত্ব ব্যবস্থা প্রবর্তনসহ নির্বাচন ব্যবস্থার আমূল সংস্কার এবং নির্বাচনের অবাধ গণতান্ত্রিক পরিবেশ ছাড়া সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের কোনো অবকাশ নেই। সংবাদ সম্মেলনে, গণতান্ত্রিক অধিকার নিশ্চিতকরণ, দলীয়করণ-দূর্নীতি-লুটপাট ও দখলদারিত্ব রোধ, সাম্প্রদায়িক জঙ্গী গোষ্ঠীর অপতৎপরতা বন্ধ, শ্রেণি-পেশাসহ জনজীবনের জরুরি দাবিসমূহ, জাতীয় সম্পদের মালিকানা সংরক্ষণ ও ব্যবহার নিশ্চিত ও জাতীয় স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব ও জাতীয় নিরাপত্তা নিশ্চিত করাসহ ৫টি শিরোনামে আশু দাবি ঘোষণা করা হয়। সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, লুটেরা পুঁজিপতি শ্রেণির নিষ্ঠুর শোষণমূলক ব্যবস্থা, বিদ্যমান স্বৈরতান্ত্রিক ফ্যাসিবাদি শাসনের অবসান এবং অন্ন, বস্ত্র, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, বাসস্থানসহ জনগণের গণতান্ত্রিক ও মানবিক অধিকার নিশ্চিত করতে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি কেন্দ্রীক লুটেরা ধনিক শ্রেণির দ্বি-দলীয় অপরাজনীতির বাইরে জনগণের নিজস্ব বিকল্প রাজনৈতিক শক্তি-সমাবেশ গড়ে তোলা জরুরি। বাম-প্রগতিশীল, গণতান্ত্রিক, দেশপ্রেমিক শক্তিকেই জনগণের প্রকৃত ভরসার স্থল হয়ে উঠতে পারে। সংবাদ সম্মেলনে মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত চেতনায় সমাজতন্ত্রের লক্ষ্যে জনগণের গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র ও সরকার প্রতিষ্ঠার আন্দোলন জোরদার করতে বাম-গণতান্ত্রিক শক্তির নেতৃত্বে সকল গণতান্ত্রিক-অসাম্প্রদায়িক ও সাম্রাজ্যবাদবিরোধী দেশপ্রেমিক রাজনৈতিক দল, গোষ্ঠী, ব্যক্তিবর্গসহ দেশবাসীকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানানো হয়। সংবাদ সম্মেলন থেকে ঘুষ-দুর্নীতি-লুটপাট-দখলদারিত্ব-অর্থ পাচারের বিরুদ্ধে আগামী ৯ আগস্ট সিপিবি-বাসদ ও গণতান্ত্রিক বাম মোর্চার ডাকে দেশব্যাপী বিক্ষোভ কর্মসূচির ঘোষণা দেওয়া হয়। আন্দোলনের অন্যান্য দাবিতে পর্যায়ক্রমিক আরো কর্মসূচি পালন করা হবে বলে জানানো হয়। সংবাদ সম্মেলনের লিখিত বক্তব্য সিপিবি-বাসদ ও গণতান্ত্রিক বাম মোর্চা আহুত সংবাদ সম্মেলন ১লা আগস্ট- ২০১৭, মৈত্রী মিলনায়তন, মুক্তি ভবন, পুরানা পল্টন, ঢাকা প্রস্তাব ও আশু দাবিসমূহ প্রিয় সাংবাদিক বন্ধুগণ, আমাদের শুভেচ্ছা গ্রহণ করুন। ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে অর্জিত স্বাধীন বাংলাদেশের অঙ্গীকার ছিল সমাজতন্ত্রের লক্ষ্যে বৈষম্যহীন, গণতান্ত্রিক, সেকুলার মানবিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার। কিন্তু স্বাধীনতার পর থেকে শাসকশ্রেণী সেই রাষ্ট্রকে মুক্তিযুদ্ধের মৌল চেতনার বিরুদ্ধে দাঁড় করিয়ে দিয়েছে; রাষ্ট্র ও সংবিধানসহ গোটা ব্যবস্থাকে চরম বৈষম্যমূলক, অগণতান্ত্রিক, নিপীড়নমূলক ও সাম্প্রদায়িক বৈশিষ্ট্য প্রদান করেছে। স্বাধীনতা উত্তর শাসক-শোষকশ্রেণী ও তাদের দলসমূহের প্রতারণা, নির্মম শোষণ, লুন্ঠন, দমন-পীড়ন আর হত্যা-খুনের রাজনীতির কারণে জনগণের মুক্তির স্বপ্ন-আকাংখা তারা বিপর্যস্ত করেছে। আওয়ামী লীগ-বিএনপি’র মত দলগুলোর দুঃশাসন আর বিভিন্ন সময়ে সামরিক শাসনের যাতাকলে অপার সম্ভাবনার বাংলাদেশ আজ দেশী-বিদেশী লুটেরা, সন্ত্রাসী, দাগি অপরাধী ও মাফিয়াদের স্বর্গরাজ্যে পরিণত হয়েছে; মাথা চাড়া দিয়ে উঠেছে ’৭১ এর গণহত্যাকারী ঘাতক শক্তিসহ নানা সাম্প্রদায়িক জঙ্গিবাদী অপশক্তি। মহাজোট সরকারের দুর্নীতি-আর দুঃশাসনে মানুষ আজ দিশেহারা। সংবিধান স্বীকৃত গণতান্ত্রিক অধিকারসমূহ এখনও রুদ্ধ, ভোটাধিকারও কেড়ে নেয়া হয়েছে। নিপীড়ন, হয়রানিমূলক মামলা, অপহরণ, গুম-খুন, বিচারবহির্ভূত হত্যাকা-ের মাধ্যমে আইনের শাসনের ছিটেফোঁটাও রাখা হচ্ছে না। বিরোধী দল ও মতকে দমন করা হচ্ছে। বিগত সরকারগুলোর ধারাবাহিকতায় টেন্ডারবাজি, দলীয়করণ, জবরদখল, ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে সীমাহীন লুটপাট ও অর্থ পাচারকে সাধারণ নিয়মে পরিণত করা হয়েছে। বিগত বছরগুলোতে অর্থপাচার বহুগুণ বেড়েছে। মানুষের জানমালের নিরাপত্তা নেই। নারী নিপীড়ন, নারী পাচার, ধর্ষণ অব্যাহত রয়েছে। নারীর সমঅধিকার ও মর্যাদা এখনও অস্বীকৃত। পাহাড় ও সমতলের আদিবাসী, ধর্মীয় ও জাতিগত সংখ্যালঘুরা রয়েছে আতংকের মধ্যে। রাজনৈতিক স্বার্থসিদ্ধির উদ্দেশ্যে সাম্প্রদায়িকতাকে উস্কিয়ে দেয়া হচ্ছে। প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে ধর্মান্ধ জঙ্গীবাদি ভাবাদর্শ ও চিন্তা-চেতনাকে মদদ দেয়া হচ্ছে। ’৭১ এর যুদ্ধাপরাধীদের বিচার প্রক্রিয়া অব্যাহত থাকলেও সাম্প্রদায়িক রাজনীতি নিষিদ্ধ হয়নি। বিগতদিনে বিএনপি জামায়াতকে তাদের জোট সঙ্গী করে চিহ্নিত যুদ্ধাপরাধীদেরকে মন্ত্রীসভায় স্থান করে দিয়েছিল। বিএনপির নেতৃত্বে যুদ্ধাপরাধী ও সাম্প্রদায়িক ফ্যাসিবাদী শক্তির গাঁটছড়ার পাশাপাশি সরকারি দল আওয়ামী লীগ সাম্প্রদায়িক শক্তিকে খোলাখুলি মদদ দিয়ে চলেছে, ধর্মাশ্রয়ী রাজনীতিকে অবলম্বন করে তুলেছে। ধর্মান্ধ জঙ্গিবাদী তৎপরতার মূলোৎপাটনের চেয়ে তাকে রাজনৈতিক স্বার্থে কাজে লাগাতেই তারা উভয়ে তৎপর। মুক্তিযুদ্ধের চেতনার তকমা আর উন্নয়নের কথা বলে বস্তুত: সরকার তাদের যাবতীয় অপকর্মকে জায়েজ করার চেষ্টা করছে। বাতিল করার সমস্ত সুযোগ থাকা সত্ত্বেও সরকার সংবিধানের ২য়, ৮ম সংশোধনী, প্রধানমন্ত্রীকেন্দ্রীক অগণতান্ত্রিক ক্ষমতা কাঠামোর ভিত্তি সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদসহ সকল অগণতান্ত্রিক, সাম্প্রদায়িক ও ক্ষুদ্র জাতিসত্ত্বাবিরোধী ধারা ও সংশোধনীসমূহ বহাল রেখেছে। সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানসমূহকে অকার্যকরি করে রাখা হয়েছে। এসবের মধ্য দিয়ে রাষ্ট্রের ফ্যাসিবাদী প্রবণতা ও চরিত্র বিপজ্জনকভাবে প্রসারিত করা হচ্ছে। চালসহ দ্রব্যমূল্যের লাগামহীন ঊর্ধ্বগতি, গ্যাস, বিদ্যুৎ, পানি, বাড়িভাড়া, গাড়ীভাড়া, চিকিৎসাসহ জীবনযাত্রার ব্যয় বৃদ্ধি, স্বল্প আয়ের সাধারণ মানুষের প্রকৃত আয় কমে যাওয়া, বিশাল বেকারত্ব, হাওরের বানভাসি লক্ষ লক্ষ পরিবারসমূহের দুর্দশা, ধারাবাহিক পাহাড় ধসে মানুষের করুণ মৃত্যু, বন্যার দুর্ভোগ-ফসলহানি, জলাবদ্ধতা, খাদ্য সংকট প্রভৃতি সাধারণ মানুষের জীবন-জীবিকাকে চরম দুর্বিসহ ও বিপন্ন করে তুলেছে। মন্ত্রী, এমপি, আমলাদের বেতন প্রায় দ্বিগুন হলেও এখনও পর্যন্ত শ্রমিকদের মজুরী বাড়েনি। শিক্ষা ও স্বাস্থ্যের মত সেবাখাতসমূহকে বাণিজ্যিক বিষয়ে পরিণত করা হয়েছে। অপসংস্কৃতির আগ্রাসন ও মাদকের থাবা ভয়াবহ পর্যায়ে উপনীত হয়েছে। সরকারের নিম্ন মধ্যম আয়ের দেশের গল্প ও কথিত উন্নয়নের রাজনীতি ধনীকে আরো ধনী করছে; ধনী-গরীবের সীমাহীন বৈষম্য আরো বাড়িয়ে তুলছে। ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির একতরফা নির্বাচনের মধ্য দিয়ে যে রাজনৈতিক সংকটের শুরু তা এখন আরো ঘনীভূত হয়েছে। সেই সংকট সমাধানের উদ্যোগ না নিয়ে যাবতীয় রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা ও সুযোগ সুবিধার অপব্যবহার করে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগাম প্রচার-প্রচারণা শুরু করে দিয়েছে। ইতিমধ্যে নির্বাচন কমিশনও আগামী সংসদ নির্বাচনের রোডম্যপ ঘোষণা করেছে। অথচ দেশে এখন অবাধ ও মুক্ত পরিবেশে জনগণের ভোট প্রদান ও নিজেদের প্রতিনিধি নির্বাচনের সুযোগ নেই। গোটা নির্বাচনী ব্যবস্থা কার্যত: ভেঙে পড়েছে। নির্বাচন পুরোপুরি টাকার খেলায় পর্যবসিত হয়েছে। দুর্নীতিবাজ, লুটেরা গোষ্ঠির কালো টাকা, সন্ত্রাস, পেশীশক্তি, সাম্প্রদায়িকতা, আঞ্চলিকতা, আমলাতান্ত্রিক খবরদারির কারণে বিদ্যমান ব্যবস্থায় সৎ, সংগ্রামী, নিবেদিতপ্রাণ রাজনৈতিক নেতা-কমীদের নির্বাচনে অংশগ্রহণ ও জয়লাভ প্রায় অসম্ভব করে তোলা হয়েছে। ভোটের সংখ্যানুপাতিক প্রতিনিধিত্ব ব্যবস্থা প্রবর্তনসহ এই সমগ্র ব্যবস্থার আমূল পরিবর্তন ছাড়া, নির্বাচনের অবাধ গণতান্ত্রিক পরিবেশ ব্যতিরেকে সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের কোন অবকাশ নেই। আর অভিজ্ঞতা প্রমাণ করেছে যে, এখানে দলীয় সরকারের অধীনে এখন নির্বাচনের নামে যে প্রহসন সংঘটিত করা হয় তা এভাবে অব্যাহত থাকলে অবাধ, নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন সম্ভব নয়, দেশবাসীও তা মনে করে। বস্তুত: এই শোষক-শাসক লুটেরা ধনীকশ্রেণী, তাদের সরকার, মহাজোট-জোট কারও কাছেই ভোটাধিকারসহ গণতান্ত্রিক অধিকারসমূহ যেমন নিশ্চিত নয়, তেমনি দেশের সার্বভৌমত্ব, জাতীয় নিরাপত্তা, জাতীয় স্বার্থ, জাতীয় সম্পদও নিরাপদ নয়। একদিকে সরকার রাষ্ট্রকে সাম্রাজ্যবাদের পদানত করে তুলেছে, অন্যদিকে তারা ভারত তোষণ আর বৈজ্ঞানিক তথ্য, যুক্তি ও জনমতকে অস্বীকার করে সরকার জেদ আর অহমিকা নিয়ে রামপালে সুন্দরবনবিনাশী কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ প্রকল্প অব্যাহত রাখছে। সরকারের নতজানু নীতির কারণে এখনও পর্যন্ত তিস্তাসহ অভিন্ন নদীর পানি প্রবাহে বাংলাদেশের ন্যায্য হিস্যা আদায়, ভারতের আন্তঃনদী সংযোগ প্রকল্প ও সীমান্ত হত্যা বন্ধ, বাণিজ্যিক ভারসাম্যে বিশাল ঘাটতির মত সমস্যাসমূহের এখনও পর্যন্ত কোন ন্যায্য সমাধান হয়নি। সাউদী আরবের নেতৃত্বে গঠিত সামরিক জোটে যোগদান, নতুন করে ভারতের সাথে প্রতিরক্ষা সহযোগিতা চুক্তি বাংলাদেশের নিরাপত্তা ঝুঁকি বাড়িয়ে তুলেছে। গো-রক্ষার নামে বিজেপি ও তার আদর্শিক সংগঠন আরএসএস ও শিবসেনার নেতৃত্বে ভারতে ধর্মীয় সংখ্যালঘু মুসলমান, আদিবাসি ও গরীব জনগোষ্ঠির উপর পরিকল্পিত হামলা, আক্রমন ও খুনের মধ্য দিয়ে সাম্প্রদায়িকতার বিষবাষ্প ছড়িয়ে দেয়া হচ্ছে। এই পরিস্থিতি উপমহাদেশে সাম্প্রদায়িকতার নতুন বিপদ যোগ করেছে যা বাংলাদেশের জন্যেও নতুন উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। এখনো পাকিস্তানের নিকট থেকে পাওনা অর্থ আদায় করা হয়নি। বরং তারা নানাভাবে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে বৈরী অপতৎপরতা অব্যাহত রেখেছে। মার্কিন, ভারত, পাকিস্তানসহ বিদেশী গোয়েন্দা সংস্থাসমূহের অপতৎপরতাও অব্যাহত রয়েছে। পাশাপাশি অব্যাহত রয়েছে বাংলাদেশে সা¤্রাজ্যবাদি লুন্ঠন, হস্তক্ষেপসহ বাংলাদেশকে কেন্দ্র করে সাম্রাজ্যবাদি-আধিপত্যবাদি নানা বৈরী তৎপরতা। এসব সমস্যা, সংকট, অধোগতি, অবক্ষয় হলো শোষক লুটেরা বুর্জোয়া শাসন তথা বিদ্যমান আর্থ-সামাজিক ব্যবস্থারই প্রতিফলন। দেশবাসী এই অবস্থার পরিবর্তন চায়, মুক্তি চায় এই দুঃসহ অবস্থা থেকে। কিন্তু সাম্রাজ্যবাদি-আধিপত্যবাদি শক্তির কাছে নতজানু লুটেরা পুঁজিপতি ধনিকশ্রেণীর দল আওয়ামী লীগ ও বিএনপির দ্বারা বা তাদের মধ্যে ক্ষমতার পালাবদলের মধ্য দিয়ে এইসব সংকট থেকে বেরিয়ে আসা যাবে না। এ অবস্থায় লুটেরা পুঁজিপতি শ্রেণীর নিষ্ঠুর শোষণমূলক ব্যবস্থা, বিদ্যমান স্বৈরতান্ত্রিক ফ্যাসিবাদি শাসনের অবসান এবং অন্ন, বস্ত্র, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, বাসস্থানসহ জনগণের গণতান্ত্রিক ও মানবিক অধিকার নিশ্চিত করতে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি কেন্দ্রীক লুটেরা ধনীক শ্রেণীর দ্বি-দলীয় অপরাজনীতির বাইরে জনগণেল নিজস্ব বিকল্প রাজনৈতিক শক্তি সমাবেশ গড়ে তোলা জরুরী। বাম প্রগতিশীল, গণতান্ত্রিক, দেশপ্রেমিক শক্তিকেই জনগণের প্রকৃত ভরসার স্থল হয়ে উঠতে পারে। তাই মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত চেতনায় সমাজতন্ত্রের লক্ষ্যে জনগণের গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র ও সরকার প্রতিষ্ঠার আন্দোলন জোরদার করতে আমরা বাম গণতান্ত্রিক শক্তির নেতৃত্বে সকল গণতান্ত্রিক-অসাম্প্রদায়িক ও সাম্রাজ্যবাদবিরেধী দেশপ্রেমিক রাজনৈতিক দল, গোষ্ঠি, ব্যক্তিবর্গসহ দেশবাসীর প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানাচ্ছি। আন্দোলনের আশু দাবিসমূহ- ১। গণতান্ত্রিক অধিকার নিশ্চিত করা ক. সভা, সমাবেশ, মিছিল, বিক্ষোভ, ধর্মঘট, হরতাল ও স্বাধীনভাবে মত প্রকাশের অধিকারসহ জনগণের জীবন-জীবিকার গণতান্ত্রিক অধিকার নিশ্চিত করুন। গণমাধ্যম ও বিচার বিভাগসহ সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানসমূহের স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে হবে। খ. সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদ, বিশেষ ক্ষমতা আইন, ২য় ও ৮ম সংশোধনীসহ সংবিধানের স্বৈরতান্ত্রিক, সাম্প্রদায়িক, জাতিসত্ত্বাবিরোধী সকল বিধান বাতিল ও সংবিধানের গণতান্ত্রিক বৈশিষ্ট্য নিশ্চিত করতে হবে। সাংবিধানিক কমিশনের মাধ্যমে সাংবিধানিক পদে নিয়োগের বিধান চালু করতে হবে। ৫৪ ধারা, ৫৭ ধারা, তথ্য প্রযুক্তি আইন, জাতীয় সম্প্রচার নীতিমালা, নিবর্তনমূলক ও অগণতান্ত্রিক সকল আইন ও সার্বজনীন মৌলিক অধিকার পরিপন্থী সকল কালাকানুন বাতিল করতে হবে। গ. জনগণের ভোটাধিকার নিশ্চিত করতে হবে। সংসদ নির্বাচনে ভোটের আনুপাতিক হারে প্রতিনিধি নির্বাচনের বিধান চালু করতে হবে। অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের জন্য গণতান্ত্রিক পরিবেশ ও গণতান্ত্রিক নির্বাচনী ব্যবস্থা এবং স্বাধীন ও আর্থিক ক্ষমতাসম্পন্ন কার্যকরি নির্বাচন কমিশন প্রতিষ্ঠা করতে হবে। নির্বাচনে সন্ত্রাস, পেশীশক্তি, টাকার খেলা, সাম্প্রদায়িকতা, দলীয়করণ ও প্রশাসনিক হস্তক্ষেপ বন্ধ করতে হবে। না ভোট, জনপ্রতিনিধি প্রত্যাহারের বিধান চালু করতে হবে। নির্বাচনকালীন সরকারের নিরপেক্ষতা নিশ্চিত করতে হবে। নির্বাচন কমিশন কর্তৃক রাজনৈতিক দলসমূহের নিবন্ধনের অগণতান্ত্রিক ও অসাংবিধানিক পদ্ধতি অবিলম্বে বাতিল করতে হবে। ঘ. সাম্প্রদায়িক জঙ্গিগোষ্ঠির অপতৎপরতা বন্ধ, ৭১ এর যুদ্ধাপরাধীদের বিচার প্রক্রিয়া অব্যাহত রাখতে হবে। সাম্প্রদায়িক রাজনীতি নিষিদ্ধ করতে হবে। ঙ. নির্যাতন-নিপীড়ন, ধর্ষণ, অপহরণ, গুম-খুন, ক্রসফায়ার, বিচারবহির্ভূত হত্যাকা-সহ রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস অবিলম্বে বন্ধ করতে হবে। স্বাধীন কমিশন গঠনের মাধ্যমে প্রতিটি বিচারবহির্ভূত হত্যাকা-ের গ্রহণযোগ্য তদন্ত, অপরাধীদের চিহ্নিত ও তাদের আইনানুগ বিচার নিশ্চিত করতে হবে। গণতান্ত্রিক আন্দোলনে পুলিশী হস্তক্ষেপ, পুলিশী ক্ষমতার অপপ্রয়োগ, পুলিশের গ্রেফতার বাণিজ্য ও রিমান্ডের নামে মানসিক-শারীরিক নির্যাতন অবিলম্বে বন্ধ করতে হবে। রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে দায়ের করা সকল হয়রানিমূলক মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করতে হবে। পেটোয়া ‘ইন্ডাষ্ট্রিয়াল’ পুলিশ, ‘ইন্ডাষ্ট্রিয়াল’ গোয়েন্দা বাতিল ও শ্রমিকদের উপর দমন-পীড়ন বন্ধ করতে হবে। চ. ধর্মীয় ও জাতিগত সংখ্যালঘুসহ মানুষের জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। ধর্মীয়, জাতিগত ও সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা সৃষ্টি ও হানাহানির প্রচেষ্টা কঠোরভাবে দমন করতে হবে। এ পর্যন্ত সংঘটিত সাম্প্রদায়িক হামলা-আক্রমণের ঘটনাসমূহের নিরপেক্ষ তদন্ত করে অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। ধর্মীয় ও জাতিগত ভিন্নতার কারণে নাগরিকদের মধ্যে বৈষম্য পুরোপুরি পরিহার করতে হবে। ধর্মীয় ও জাতিগত সংখ্যালঘুদের ভূমি, সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য রক্ষা করতে হবে। উন্নয়ন তৎপরতায় আঞ্চলিক বৈষম্যের নীতি পরিহার করতে হবে। ২। দলীয়করণ, দুর্নীতি, লুটপাট ও দখলদারিত্ব রোধ ক. ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের পারিবারিকীকরণ, দলীয়করণ, ব্যাংক, শেয়ার মার্কেট, আর্থিক প্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন স্তরে চুরি, দুর্নীতি, লুটপাট, টেন্ডারবাজির হোতাদের শনাক্ত করে তাদের গ্রেফতার, লুট ও পাচারকৃত অর্থ উদ্ধার, তাদের স্থাবর-অস্থাবর সম্পদ বাজেয়াপ্ত করার কার্যকরি পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। কালো টাকা ও খেলাপি ঋণ উদ্ধারে পদক্ষেপ নিতে হবে। খ. বিচার ব্যবস্থা, প্রশাসন, শিক্ষা ও স্বাস্থ্য ব্যবস্থাসহ সকল ক্ষেত্রে দলীয়করণ বন্ধ করতে হবে। সকল ক্ষেত্রে মেধা, যোগ্যতা ও দক্ষতার স্বীকৃতি দিতে হবে। গ. অর্থ পেশীশক্তি, ক্ষমতা ও দলীয় প্রভাব খাটিয়ে রাষ্ট্র ও জনগণের সাধারণ সম্পদ- বন, বনাঞ্চল, নদী, জলাভূমি, জমি, মাঠঘাট, প্রতিষ্ঠান, দখলকারিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। ঘ. দুর্নীতি দমন কমিশনকে আমূল সংস্কার করে কার্যকরি প্রতিষ্ঠানে পরিণত করতে হবে। ৩। শ্রেণী-পেশাসহ জনজীবনের জরুরী বাঁচার দাবি ক. অবিলম্বে মজুরী কমিশন গঠন করে শ্রমিকদের ‘ন্যূনতম জাতীয় মজুরী’ ১৬ হাজার টাকা নির্ধারণ করতে হবে। শ্রমিক-কর্মচারীদের অবাধ ট্রেড ইউনিয়ন অধিকার নিশ্চিত এবং শিল্প ও শ্রমিক স্বার্থে গণতান্ত্রিক শ্রম আইন প্রণয়ন করতে হবে। গ্রাম-শহরে শ্রমজীবী মেহনতিদের জন্য স্বল্পমূল্যে রেশনিং ব্যবস্থা চালু করতে হবে। খ. চালসহ নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসের লাগামহীন মূল্যবৃদ্ধি রোধ করতে হবে। কালোবাজারী, অসৎ সিন্ডিকেট ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। গ্যাস-বিদ্যুৎ-পানির মূল্যবৃদ্ধির অপতৎপরতা বন্ধ করতে হবে। বাসা ভাড়া-পরিবহন ভাড়া নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। আবাসন সংকট সমাধান এবং রেল, নৌ-পথ সম্প্রসারণসহ গণপরিবহন ব্যবস্থা জোরদার করতে হবে। গ. ধান, পাটসহ কৃষিপণ্যের লাভজনক মূল্য নিশ্চিত করতে হবে। ইউনিয়ন পর্যায়ে ক্রয় কেন্দ্র খুলে কৃষকদের কাছ থেকে সরাসরি ধান ক্রয় করতে হবে। আমূল ভূমি ও কৃষি সংস্কার করতে হবে। ভূমিহীন-খেতমজুরদের নাম রেজিষ্ট্রেশন এবং খাসজমিতে ভূমিহীনদের অধিকার নিশ্চিত করতে হবে। নগরায়ন ও উন্নয়নের নামে আবাদি কৃষি জমির ধ্বংস বন্ধ এবং ভূমিগ্রাসী দুর্বৃত্তদের বিরুদ্ধে শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে। বানভাসী হাওরের কৃষকদের উপযুক্ত পুনর্বাসন করতে হবে। জলমহাল ও হাওরকে মুক্ত ঘোষণা করে মৎস্যজীবী, ভূমিহীন ও গরীবদের মাছ ধরার অধিকার নিশ্চিত করতে হবে। বন্যা কবলিত অঞ্চলসমূহে অবিলম্বে খাদ্য সামগ্রী পৌঁছানো এবং প্রয়োজনীয় পুনর্বাসন নিশ্চিত করতে হবে। খেতমজুরদের সারা বছর কাজ নিশ্চিত করতে হবে। ঘ. বেকারদের উপযুক্ত কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করতে হবে। বেকারদের নাম তালিকাভুক্ত করে কর্মসংস্থান না হওয়া পর্যন্ত তাদেরকে বেকার ভাতা দিতে হবে। পুনর্বাসন ছাড়া হকার, রিক্সা ও বস্তি উচ্ছেদ বন্ধ করতে হবে। মানব পাচারের সাথে যুক্ত সি-িকেট হোতাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহন করতে হবেকরতে হবে। অভিবাসী শ্রমিকদের ন্যায্য মজুরী, নিরাপত্তাসহ তাদের গণতান্ত্রিক ও মানবিক অধিকার রক্ষায় উপযুক্ত পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। মাদক ও মাদকের বিস্তার রোধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। ঙ. রাষ্ট্র, সমাজ ও পরিবারের সকল ক্ষেত্রে নারী-পুরুষের সমঅধিকার নিশ্চিত করতে হবে। ‘ইউনিফর্ম সিভিল কোড’ চালু করতে হবে। ধর্ষণ, যৌন নিপীড়ন ও নারীর লাঞ্চনা-অপমানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। যৌন নিপীড়ন বিরোধী আইন যথাযথভাবে বাস্তবায়ন করতে হবে। চ. বৈষম্যমূলক বর্তমান শিক্ষানীতি বাতিল করে রাষ্ট্রীয় খরচে সকলের জন্য শিক্ষা এবং একই ধারার সার্বজনীন, বিজ্ঞানভিত্তিক, গণতান্ত্রিক, সেক্যুলার শিক্ষা ব্যবস্থা চালু করতে হবে। শিক্ষার বাণিজ্যিকরণ ও সাম্প্রদায়িকরণ বন্ধ করতে হবে। শিক্ষার মান উন্নয়নে কার্যকরি পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। ছ. বিরাজমান মুনাফাকেন্দ্রীক গণবিরোধী চিকিৎসা ব্যবস্থার অবসান, চিকিৎসা ব্যবস্থার সম্প্রসারণ করে সরকারি স্বাস্থ্য ব্যবস্থার অধীনে প্রত্যেক নাগরিকের উপযুক্ত চিকিৎসা প্রাপ্তি নিশ্চিত করতে হবে। সরকারি চিকিৎসকদের প্রাইভেট প্রাকটিস বন্ধ করতে হবে। ৪। জাতীয় সম্পদের মালিকানা, সংরক্ষণ ও ব্যবহার নিশ্চিত করা ক. ‘জাতীয় সম্পদের মালিকানা জনগণের’- এই নীতির ভিত্তিতে জাতীয় স্বার্থে জাতীয় সম্পদের অনুসন্ধান, উত্তোলন, সংরক্ষণ ও উপযুক্ত ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে। অসম পিএসসি চুক্তি বাতিল ও ‘খনিজ সম্পদ রপ্তানী নিষিদ্ধ আইন’ প্রণয়ন করতে হবে। খ. সুন্দরবন ধ্বংসকারী রামপাল কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎপ্রকল্পসহ অন্যান্য স্থাপনা নির্মাণ অবিলম্বে বন্ধ করতে হবে। প্রাণ-প্রকৃতি, পরিবেশ রক্ষা করতে হবে। জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলায় উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ রূপপুর পারমানবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের কাজ স্থগিত করতে হবে। জাতীয় প্রতিষ্ঠান বাপেক্স-পেট্রোবাংলার সক্ষমতা বৃদ্ধির উদ্যোগ নিতে হবে। ফুলবাড়ি আন্দোলনের নেতৃবৃন্দসহ শ্রমিক, ছাত্র, পেশাজীবীদের আন্দোলনের নেতৃবৃন্দের বিরুদ্ধে দায়ের করা হয়রানিমূলক সকল মামলা প্রত্যাহার করতে হবে। ৫। জাতীয় স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব ও জাতীয় নিরাপত্তা নিশ্চিত করা ক. জাতীয় স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব ও জাতীয় নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, সাউদী আরব ও ভারতসহ বিদেশীদের সাথে

Print প্রিন্ট উপোযোগী ভার্সন

Login to comment..