বাম গণতান্ত্রিক জোট আয়োজিত সমাবেশে নেতৃবৃন্দ অবিলম্বে দেশের সকল শ্রমিক কর্মচারীদের বেতন ও বোনাস প্রদান, ঈদের ছুটি যথাযথভাবে নিশ্চিত করা এবং শ্রমিক-কর্মচারী এলাকায় ঈদ সামগ্রী ন্যায্যমূল্যে প্রদানের দাবি জানিয়েছেন।
আজ ২ এপ্রিল ২০২৪ বিকাল ৪টায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে বাম গণতান্ত্রিক জোটের কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক ও বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি)'র সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্সের সভাপতি অনুষ্ঠিত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন, সিপিবির সভাপতি মোহাম্মদ শাহ আলম, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল বাসদের সহকারী সাধারণ সম্পাদক রাজেকুজ্জামান রতন, বাসদ (মার্কসবাদী)’র রাশেদ শাহরিয়ার, গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টির সাধারণ সম্পাদক মোশরেফা মিশু, বিপ্লবী কমিউনিস্ট লীগের কেন্দ্রীয় সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য শামীম ইমাম ও বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক পার্টির নির্বাহী সভাপতি আব্দুল আলী।
সমাবেশে নেতৃবৃন্দ বলেন, ঈদ কোনো আকস্মিক বিষয় নয়। ফলে ঈদের বোনাস এবং শ্রমিকদের বকেয়া বেতন পরিশোধের বিষয়ে পূর্ব প্রস্তুতি নিয়ে কোনো তালবাহানা অগ্রহণযোগ্য। তারপরও প্রতি বছর ঈদের পূর্বে শ্রমিকদের উৎসব বোনাস থেকে বঞ্চিত করা এবং শ্রমিকদের বেতন-ভাতা বকেয়া রেখে আকস্মিকভাবে কারখানা বন্ধ করার ঘটনা নিয়মিত ঘটেই চলেছে। কিন্তু কোনো বছরই দায়ী মালিকদের বিরুদ্ধে কার্যকর কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ না করার ফলে মালিকরা এটাকে সুযোগ হিসেবে গ্রহণ করে শ্রমিকদের প্রাপ্য না দিয়ে প্রতারণা করে এবং শ্রমিকদেরকে উৎসবের
আনন্দ থেকে বঞ্চিত করে।
নেতৃবৃন্দ প্রশ্ন রাখেন, ঈদের আগে বোনাস ও বকেয়া মজুরি না দিয়ে যদি ৯ বা ১০ এপ্রিলে গার্মেন্টস ছুটি দেওয়া হয় তাহলে বোনাস ও বকেয়া নিয়ে জটিলতা হলে তা নিরসন হবে কিভাবে? ফলে অসন্তোষ বিক্ষোভে পরিণত হবে এবং শিল্পাঞ্চলে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়বে।
এ ধরনের কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে এবং শ্রমিকদের ঈদযাত্রা নির্বিঘ্ন করতে নেতৃবৃন্দ অবিলম্বে শ্রমিকদের বকেয়া বেতনসহ পূর্ণ ঈদ বোনাস ও বেতন পরিশোধের জোর দাবি জানান।
নেতৃবৃন্দ বলেন, দ্রব্যমূল্যের ক্রমবর্ধমান ঊর্ধ্বগতিতে শ্রমিকদের জীবনে নাভিশ্বাস উঠেছে। রমজানকে কেন্দ্র করে এই মূল্যবৃদ্ধি আরও তীব্র সংকটের জন্ম দিচ্ছে। এই সংকটে চাল, ডাল, তেল, চিনিসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য রেশন দরে শ্রমিক এলাকায় সরবরাহ করার জন্য নেতৃবৃন্দ জোর দাবি জানান।
সমাবেশে নেতৃবৃন্দ দেশের রাষ্ট্রীয় শিল্প কলকারখানা ধ্বংসের জন্য সরকারের নীতিকেই দায়ী করে বলেন, স্বাধীনতার অন্যতম অর্জন ছিল রাষ্ট্রীয় খাত। এই খাতকে পরিকল্পিতভাবে ধ্বংস করে ফেলা হয়েছে। পাটকল শ্রমিকদের সমুদয় পাওনা এখনো পরিশোধ করা হয় নাই। অঙ্গীকার থাকলেও রাষ্ট্রীয় উদ্যোগে পাটকল চালু না করে লিজ দেওয়ার নামে জায়গা জমি ও মেশিনপত্র লুটপাটের আয়োজন চলছে। নেতৃবৃন্দ আধুনিকায়ন করে রাষ্ট্রীয় উদ্যোগে সকল পাটকল চালুর দাবি জানান।
সমাবেশ শেষে একটি বিক্ষোভ মিছিল নগরীর বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে ।