আজ ২৯ মার্চ ২০২৪, শুক্রবার, সকাল ১১টায়, বাম গণতান্ত্রিক জোট কেন্দ্রীয় পরিচালনা পর্ষদের সভা মুক্তিভবনস্থ সিপিবির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত হয়। বাম গণতান্ত্রিক জোটের সমন্বয়ক ও বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি)’র কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্সের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় বক্তব্য রাখেন বাসদ (মার্কসবাদী)’র সমন্বয়ক মাসুদ রানা, গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টির সাধারণ সম্পাদক মোশরেফা মিশু, বাসদের সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য নিখিল দাস, বিপ্লবী কমিউনিস্ট লীগের সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য শামীম ইমাম, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক পার্টির নির্বাহী সভাপতি আব্দুল আলী ও শহিদুল ইসলাম সবুজ।
সভায় নেতৃবৃন্দ বলেন, ২৫ রমজানের মধ্যে শ্রমিক-কর্মচারীদের বেতন-বোনাসের টাকা প্রদান করতে হবে। নানা অজুহাত দেখিয়ে বেতন-বোনাস থেকে শ্রমিক-কর্মচারীদের বঞ্চিত করা যাবে না। এ বিষয়ে সরকারের পক্ষ থেকে সুনির্দিষ্ট তারিখ ঘোষণার দাবি জানান নেতৃবৃন্দ। উপরোক্ত দাবিতে আগামী ২ এপ্রিল ঢাকায় সমাবেশ ও বিক্ষোভ মিছিলের কর্মসূচি ঘোষণা করেছে বাম জোট।
সভায় নেতৃবৃন্দ উপজেলা নির্বাচনে জামানতের টাকা ১৫ গুণ বৃদ্ধি, ব্যয়ের পরিমাণ বৃদ্ধি, রঙিন পোস্টার ছাপানোর অনুমতিসহ ব্যয় বৃদ্ধির আইনি সিদ্ধান্তের তীব্র প্রতিবাদ ও ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, দেশে এমনিতেই নির্বাচন নেই, নির্বাচন কমিশন সরকারের নির্দেশ অনুযায়ী কাজ করে যাচ্ছে। জনগণের কাছে গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের আশাকে ধূলিসাৎ করে দিচ্ছে। আর এই জামানত বৃদ্ধির সিদ্ধান্তের মধ্য
দিয়ে তৃণমূল পর্যায়েও নির্বাচনকে কোটি টাকা ও লুটেরাদের খেলার বস্তুতে পরিণত করা হচ্ছে। সভায় অবিলম্বে এই গণবিরোধী সিদ্ধান্ত বাতিল এবং সংখ্যানুপাতিক পদ্ধতি প্রবর্তনসহ নির্বাচন ব্যবস্থার আমূল পরিবর্তন, দক্ষ ও শক্তিশালী স্থানীয় সরকার ব্যবস্থা গড়ে তুলতে পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানানো হয় ।
সভায় বিভিন্ন ব্যাংক একত্রিকরণের খবরে উদ্বেগ প্রকাশ করে বলা হয়, ব্যাংক খাতের অব্যবস্থাপনা ও দুর্নীতির সাথে জড়িতদের জেলে ভরার কথা, সেটা না করে সরকার একীভূত করার মধ্য দিয়ে এসব দুর্নীতিবাজদের কি প্রশ্রয় দিচ্ছেন না?
সভায় দুর্নীতি লুটপাট, অর্থ পাচারকারী, ঋণখেলাপিদের তালিকা প্রকাশ, এসব ঘটনার নেপথ্যের নায়কদের চিহ্নিত করা এবং এদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানানো হয়।
সভায় নিত্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধি ঠেকাতে ব্যর্থ সরকারের সমালোচনা করে বলা হয়, মুক্তবাজারের নামে চলমান লুটপাট ও সিন্ডিকেটের ব্যবস্থা বহাল রেখে মূল্যবৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণ করা যাবে না। সারাদেশে রেশন ব্যবস্থা, ন্যায্যমূল্যের দোকান চালু, সরকারি উদ্যোগে নিত্যপণ্যের বাফার স্টক গড়ে তোলা এবং সিন্ডিকেটের হাত থেকে আমদানি পণ্যকে মুক্ত করার দাবিও জানানো হয়। একইসাথে নিত্যপণ্যসহ বিদ্যুৎ-গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধির যেকোনো গণবিরোধী সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে দেশবাসীকে ঐক্যবদ্ধভাবে রুখে দাঁড়ানোর আহ্বান জানানো হয়।
সভায় ঢাকা মহানগরের বিভিন্ন থানা ও জেলায় কর্মীসভাসহ বেশ কিছু সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়।